পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ জঙ্গি নিহত

সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মার্চ ২০২৫, ৫:৪৩ অপরাহ্ণপাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে চার শতাধিক যাত্রী বহনকারী একটি ট্রেনে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র জঙ্গিরা। জিম্মি থেকে শিশুসহ দেড়শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হামলাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) কমপক্ষে ২৭ সদস্য নিহত হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
এছাড়া ট্রেনটিতে এখনও যেসব যাত্রীরা জিম্মি রয়েছেন তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি মঙ্গলবার বালুচিস্তানের বোলান এলাকায় পৌঁছানোর পর হামলার শিকার হয়। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রেললাইনের একটি অংশও উড়িয়ে দেওয়া হয়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মি।
হামলার সময় ট্রেনে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর শতাধিক সদস্যসহ কমপক্ষে চারশ’ যাত্রী ছিলেন যাদের বেশিরভাগই হামলাকারীদের হাতে জিম্মি হন।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে যে, যাত্রীদের জিম্মি করে বালুচিস্তানের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবি করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়া হলে জিম্মিদের হত্যা করারও হুমকি দিয়েছে তারা।
এদিকে, হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। এরপর জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধারে শুরু হয় বিশেষ অভিযান।
বুধবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে যে, অভিযানে শিশুসহ দেড়শতাধিক যাত্রীকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে আহত ১৭ জন যাত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন ট্রেনটি এখন “পাহাড়ে ঘেরা একটি সুড়ঙ্গের ঠিক সামনে আটকে রয়েছে”।
পাকিস্তানের সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় বালুচ লিবারেশন আর্মির সদস্যরা এখন নারী ও শিশুদের ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে খুব সাবধানতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বেলুচিস্তানের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবি না মেনে জিম্মি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখলে সরকারকে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে বালোচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ)।
ফিরে আসা যাত্রীরা যা বলছেন
নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে যে শতাধিক যাত্রী জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। জিম্মি থাকাকালে তাদের ‘ভয়াবহ অভিজ্ঞতা’ হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন কেউ কেউ।
“আমরা যে কীভাবে পালিয়ে এসেছি, সেটা বর্ণনা করার মতো ভাষা আমার জানা নেই। এই অভিজ্ঞতা ভয়াবহ,” জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর বলেন মুহাম্মদ বিলাল।
আরেক যাত্রী আল্লাদিত্তা জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ৪৯ বছর বয়সী এই যাত্রী বলছিলেন যে, আক্রমণকারীরা যখন ট্রেনে হামলা চালিয়েছিল তখন যাত্রীরা “আতঙ্কে সিটের নিচে লুকাতে শুরু করেছিলেন”।
আন্তর্জাতিক/আবির