খালেদা জিয়ার আত্মীয়রা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০১৫, ১১:২৭ অপরাহ্ণঘরে-বাইরে ফের ষড়যন্ত্রের মুখে বিএনপি ও জিয়া পরিবার। ওয়ান ইলেভেনের মতো আবারো বিএনপি ও জিয়া পরিবার নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের কুশীলবরা বেগম খালেদা জিয়ার নিকট আত্মীয় ও গুলশান কার্যালয়কেন্দ্রিক পরিবহন শ্রমিক নেতা। জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
বিগত ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাইদ ইসকান্দার সেনাসমর্থিত সরকারের মদদে নিজেকে দলের সভাপতি ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীতে দলের মধ্যে তাকে কেউ গ্রহণ না করায় এবং তারেক রহমানের সরাসরি বিরোধিতার কারণে তার সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু থেমে থাকেনি ঘরোয়া ওই ষড়যন্ত্র। বর্তমানে খালেদা জিয়ার আরেক ছোট ভাই, তার স্ত্রী ও গুলশান কার্যালয়ে এক প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করছেন। তবে এবার তাদের লক্ষ্য ভিন্ন। খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানকে মাইনাস নয়। বরং তাদেরকে মানসিক চাপে রেখে দলের মধ্যে নিজেদের অধিপত্য সৃষ্টি ও তাদের সমর্থনপুষ্ট লোকদেরকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছেন। এর বাইরে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সরকারের কাছে পৌঁছানোর কাজটি তারা অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রটি বলছে, খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরে তিনি তার ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারীকে সঙ্গে নেননি। পাশাপাশি তার পরিবারের কোনো সদস্যকে এবার তার সফর সঙ্গী হিসেবে নেননি। কিন্তু খালেদা জিয়া লন্ডন সফরে যাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে বিমানের বিজনেস ক্লাসের টিকিটে খালেদা জিয়ার ওই দুই নিকটাত্মীয়কে গুলশান কেন্দ্রীক এক শ্রমিক নেতা লন্ডনে পাঠান সেখানকার খবরাখবর জানার জন্য। কিন্তু সেখানে গিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তারা। কারণ তারেক রহমান তাদেরকে সেখানে গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে।
নানা চাপের মধ্যে পড়ে দেশের অন্যমত প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ব্যাপক জন সর্মথন থাকা সত্ত্বেও ফেরারি দলে পরিণত হয়েছে। র্দীঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থাকা দলটি কোনো ভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ঘরে বাইরে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়ে দিকহারা হয়ে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
২০০৭ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে কোনোভাবেই কিছু করতে পারছে না। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমুল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা নানা মামলায় জড়িয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগ হয়েছে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের ষড়যন্ত্র। এদিকে দীর্ঘ সময় চুপ থাকার পর জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই আহমেদ কামাল হঠাৎ নড়ে চড়ে বসছেন। তিনি আগামী ৪ নভেম্বর রাজধানীর কাকরাইলস্থ ‘ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স’ জিয়াউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া অুনষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রটি বিএনপির নেতাদের কাছে এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছানো হয়েছে। অনেকে এটাকে আরেকটি ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।
বিএনপির মধ্যে অনেকেই মনে করেন খালেদা জিয়ার নিকট আত্মীয়রা যদি তার সঙ্গে বেইমানী না করতো তাহলে ১/১১ জš§ হতো না। সাঈদ ইসকান্দারের ভায়রা লে জে মইনকে সাঈদ ইসকান্দারের পছন্দে সেনা প্রধান করায় তারেক রহমানের তা মনপূত হয়নি। এখান থেকেই মূলত জিয়া পরিবারের সঙ্গে খালেদা জিয়ার নিকটত্মীয়দের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
সুত্র জানায়, দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে গুলশানে রাজনৈতিক কার্যালয়ে মূলত বিএনপি চেয়ারপারসনকে বন্দি করে রেখেছে একটি চক্র। এই চক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেছেন। তাদের অভিযোগ তাদেরকে নেত্রীর কাছে যেতে দেওয়া হয় না। আবার অনেক তথ্য খালেদা জিয়া পর্যন্ত পৌঁছায় না। সকল তথ্য পাচার হয়ে যায়। আর এসবের সঙ্গে জড়িত খালেদা জিয়ার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী যিনি আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতা ও সেক্টর কমান্ডার একে খন্দকারের আত্মীয় এবং ব্যক্তিগত সহকারীসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।
জিয়া পরিবার সংশ্লিষ্ঠ ঘনিষ্ট এই সূত্রের দাবি, বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়া মারা যাওয়ার পর তার মরদেহ দেশে আনার ব্যাপারে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয় ওই তিন জনের বিরুদ্ধে। তাদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে না পেরে ফিরে আসেন। প্রধানমন্ত্রী গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে ফিরে আসার পেছনেও কলকাঠি নেড়েছেন ওই তিনজন।
এবিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত এটা নতুন কিছু না। সরকার নানাভাবে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের ওই চেষ্টা সফল হবে না। আমি মনে করি এটা সরকারের আরেকটি নতুন চক্রান্ত। নেত্রীর পরিবারের নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এটা সরকারের আরেকটি অপকৌশল ছাড়া আর কিছু না।
. . . . . . . . .