রমজান মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ৩:১৭ অপরাহ্ণশায়খ ইমদাদ আল মাদানী
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি এবং তাহার নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরুদ ও সালাম পেশ করি । এমন এক মাস নিয়ে আলোচনা যে মাস আল্লাহ তাআলার দরবারে অত্যন্ত পছন্দনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস । যাহারা এই মাসকে পাবেন তারা যেন এই মাসের সম্মান রক্ষা করেন ।
কেননা এই মাসের জন্য আল্লাহ তাআলার অসংখ্য-অগণিত সৃষ্টি তাকিয়ে থাকে কখন যেন রমজান মাস আসে আর মহান আল্লাহ তাআলা রহমতের দৃষ্টিতে তাকান এবং অপরাধ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনুল কারীমে রমজান মাসের গুরুত্ব নিয়ে সুরা বাকারার মধ্যে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন ।
এবং অসংখ্য অগণিত হাদিস নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে এরশাদ হয়েছে রমজানের গুরুত্ব নিয়ে। আল্লাহর বান্দা বান্দি যখন রমজান মাসের রোজা রাখে আল্লাহ তা’আলা এর পক্ষ থেকে ওই বান্দা এবং বন্দী এর জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয় । যে মাসে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করেছেন ।
আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : রমযান মাসই হল সেই মাস যাতে অবতীর্ণ করা হয়েছে কোরআন মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্য পথে যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ-নির্দেশ আর ন্যায় অন্যায় এর মধ্যে পার্থক্য । কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এই মাসটি পাবে সে যেন এই মাসের রোজা রাখবে । আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে যেন অন্যদিনে রোযা পূরণ করবে ।
আল্লাহ তোমাদের জন্যে সহজ করতে চান তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না । যাতে তোমরা রোযা পূরণ কর আর আল্লাহর প্রদত্ত পথ নির্দেশনার জন্য তোমরা তাহার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর । ( সূরা বাকারা ) । আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে যত আসমানী কিতাব অবতীর্ণ করেছেন সব কিতাব রমজান মাসে অবর্তীর্ণ করেছেন ।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কেউ যদি রমজান মাসের রোজা ঈমানদার অবস্থায় রাখে এবং রোজার হেফাজত করে আল্লাহতায়ালা তাহার সামনের পেছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন । ( বুখারী ও মুসলিম ) । নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেনঃ কেয়ামতের ময়দানে রোজা এবং কুরআনুল কারীম সুপারিশ করবে ।
বুখারী শরীফের অন্য এক বর্ণনায় এসেছে জান্নাতের মধ্যে আটটি দরজা থাকবে একটি দরজার নাম থাকবে রাইয়ান যেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে শুধুমাত্র রোজাদার ব্যক্তিরা । বুখারী শরীফের অন্য এক বর্ণনায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন : যখন তোমাদের মধ্যে রমজান মাস আসবে তখন রহমতের দরজা খুলে দেয়া হবে জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে এবং শয়তানকে জিঞ্জির দিয়ে বেঁধে ফেলা হবে ।
অতএব আমরা যেন এই নেয়ামত পূর্ণ মাসের রোজা রাখা থেকে বিরত না তাকি । আমাদের মধ্যে অনেক মুসলিমরা রমজান মাসের রোজা রাখেন না তাহাদের জন্য দুর্ভাগ্য এত বড় একটি নিয়ামত পাওয়ার পরে তারা সেই নেয়ামত কাজে লাগায় না । এই পার্থিব দুনিয়ার আভিজাত্য ও ভোগ বিলাসিতা তারা ব্যস্ত থাকে ওই সমস্ত দুর্ভাগা ব্যক্তিদেরকে লক্ষ্য করে বলতেছি এখনো সময় আছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিধানের উপরে জীবন বাস্তবায়িত করার জন্য ।
হতে পারে আগামী রমজান মাস আমাদের কাছে নাও আসতে পারে এর আগে আমরা চির বিদায় নিয়ে নিতে পারি এজন্য আমরা যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দেয়া বিধান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং রোজা পূর্ণভাবে আদায় করি আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন এই কামনা করি সব সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে ।
লেখক: শায়খ ইমদাদ আল মাদানী প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল আল হিকমাহ মডেল মাদ্রাসা: