সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে বিনিয়োগ আসবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ৭:১২ অপরাহ্ণ
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বর্গভূমি বাংলাদেশ। আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি দুটি দেশ ভারত কিংবা মিয়ানমারের দিকে তাকালে এটি বুঝতে বেশিক্ষণ সময় লাগার কথা নয়। এদেশে একেবারেই কোনকিছু ঘটনা এমনটি নয়। সংঘাত মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসকল সংঘাত রাজনৈতিক কারণে হয়, সাম্প্রদায়িক কারণে নয়।
শনিবার (১ নভেম্বর) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্ঘ্যপূর্ণ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে বড় হয়েছি, স্কুল-কলেজে গেছি, চাকরি করেছি। একসাথে বাজারে যাই, একসাথেই বসবাস করি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আমরা একসাথে যুদ্ধ করেছি। চব্বিশের জুলাই বিপ্লবেও আমরা একসাথে স্বৈরাচার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, এদেশ আমাদের সবার। আমার যেমন অধিকার রয়েছে একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী সকলের সমান অধিকার রয়েছে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তাদের অধিকার যেন ক্ষুণ্ন করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা। সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে ড. খালিদ বলেন, কোনো দেশে যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকে, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে কিংবা সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে সংঘাত হয় তাহলে সেই দেশ কখনও উন্নত হবে না। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না, পর্যটকদের আগমন ঘটবে না। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য সকল ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
লালমনিরহাটকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উর্বর ভূমি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এখানে মসজিদ, মন্দির, গীর্জায় কোনো ধরনের বিবাদ নেই, বিসংবাদ নেই। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আরও সুদৃঢ় করতে হবে। তিনি লালমনিরহাট জেলার মাদকাসক্তি, কিশোর গ্যাংসহ অন্যান্য সামাজিক সমস্যা নিরসনে সকলকে একসাথে কাজ করার অনুরোধ করেন।
বিগত ১৭ বছরে লালমনিরহাটে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগাকে দুঃখজনক হিসেবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আপনারা এমন প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন যিনি লালমনিরহাটকে সোনায় মুড়িয়ে দিতে পারেন। আমরা অভিযোগ শুনতে চাই না, কাজ দেখতে চাই।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে হাদীস উদ্ধৃত করে ড. খালিদ বলেন, মহানবী (সা.) জীবনে অনেক যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তিনি যুদ্ধের প্রাক্কালে সাহাবীদের ডেকে নির্বিচারে গাছ কাটতে, নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করতে এবং মন্দির কিংবা গীর্জায় যারা অবস্থান করে তাদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। মহানবী (সা.)-এর এই সমরনীতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির।
জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম জেলা নায়েবে আমির মো. হাবিবুর রহমান ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এইচ এম বরকতুল্লাহ প্রমুখ।
জাতীয়/আবির




