শনিবার সিলেটে এম এ মালিকের বিশাল গণসমাবেশ
 
 সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৭:৪২ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের দাবিতে আগামী শনিবার (১ নভেম্বর ২০২৫) দুপুর ২ ঘটিকায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা চন্ডিপুল পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক বিশাল গণসমাবেশ ও মিছিল।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন এবং ধানের শীষ প্রতীকে জনসম্পৃক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনসমূহ। গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ এম এ মালিক।
সমাবেশ উপলক্ষে এম এ মালিক বলেন, “আমরা আজ একত্রিত হয়েছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে। গত ১৫ বছর ধরে দেশে একদলীয় শাসন চলছে, যা জনগণের ভোটাধিকার ও রাষ্ট্রীয় ভারসাম্যকে ধ্বংস করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিএনপি পরিবার হিসেবে স্পষ্টভাবে জানাতে চাই—যারা এই দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বিচারব্যবস্থাকে বিকৃত করেছে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে—আমরা তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াব।”
এম এ মালিক বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক ঘোষিত কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আমরা চাই—বাংলাদেশে সাম্য, মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক, আইনের শাসন ফিরে আসুক, এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।”
আগামী শনিবার একটি শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ ও র্যালি শুরু হবে।
র্যালি চন্ডিপুল চৌরাস্তা পর্যন্ত গিয়ে সমাপনী বক্তব্য ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে শেষ হবে।
এম এ মালিক বলেন, “আমরা চাই মানুষ যেন কষ্ট না পায়। এই কর্মসূচি কোনো দলীয় শোডাউন নয়—এটি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন।”
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি প্রসঙ্গে এম এ মালিক বলেন, “আমরা তা পূর্ণ সমর্থন করি। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে—কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষার প্রসার, কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ, প্রশাসনে জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।”
তিনি বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা দেশকে আবার উৎপাদনমুখী ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।”
এম এ মালিক বলেন, “আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনরা বাংলাদেশের অর্থনীতির রক্তধারা। তাদের সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটিও বেশি।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা চাই প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষা করা হোক, অবৈধ দখলমুক্ত করা হোক এবং তারা যেন দেশের উন্নয়নে আরও কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেন।”
আগামী ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য নির্বাচনের বিষয়ে এম এ মালিক বলেন, “আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। জনগণ যেন তাদের প্রকৃত প্রতিনিধি বেছে নিতে পারে। আমি ২০১৮ সালেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমার পাসপোর্ট আটকিয়ে রেখেছিল, তাই আমি দেশে আসতে পারি নাই। এমনকি হাসিনা সরকার আমার মায়ের লাশ নিয়েও আসতে দেয় নাই। এবার প্রস্তুত আছি।”
তিনি বলেন, “আমি রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্য, নিজের স্বার্থের জন্য নয়। জনগণ যদি আমাকে চায়, আমি লড়ব; না চাইলে নির্বাচন করব না, কিন্তু দেশের জন্য লড়াই থামাব না।”
গত ১৫ বছরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী মামলা, হামলা ও কারাবরণ করেছেন—উল্লেখ করে এম এ মালিক বলেন, “অনেকেই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন। তবুও আমরা মাথা নত করিনি। আমরা কোনো ‘ম্যানেজ পার্টি’ নই, আমরা জনগণের দল—শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি কর্মী।”
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী, গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া তিলে তিলে নির্যাতিত হয়েছেন, তবুও মাথা নত করেননি। আমরা তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শেষ পর্যন্ত লড়ব।”
বক্তব্যের শেষে এম এ মালিক বলেন, “আমরা উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, জনগণের অধিকার ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল থাকব। যারা এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে—তারা যত শক্তিশালীই হোক, জনগণের আন্দোলনে তাদের পতন অনিবার্য।”
তিনি সকল নেতাকর্মী ও জনগণকে আহ্বান জানান
“আসুন, আগামী শনিবারের কর্মসূচিকে সফল করে প্রমাণ করবে বাংলাদেশের মানুষ এখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে,
এবং বিএনপি সেই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।”
রাজনীতি/হা





