নির্বাচনী প্রচারে নেমে আরিফ বললেন আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট আশাবাদী
 
 সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৪:০৫ অপরাহ্ণ
সিলেট-১ আসনে জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
বুধবার বিকেলে তিনি সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এরপর নগরের বন্দরবাজার পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তিনি। এসময় আরিফের সাথে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এই আসনের বিএনপি চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। সপ্তাহখানেক আগে তিনিও শাহজালাল মাজার এলাকা থেকে ‘আনষ্ঠিানিক প্রচারণা’ শুরু করেন।
তবে বুধবার প্রচারণা শুরুর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট আশাবাদী। দল আমাকে মূল্যায়ন
সিলেট-১ (মহানগর-সদর) নির্বাচনী আসনটি জাতীয় রাজনীতিতে মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রচলিত মিথ হচ্ছে, সংসদ নির্বাচনে এ আসনটিতে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন সেই দল সরকার গঠন করে। স্বাধীনতার পর প্রায় সবকটি জাতীয় নির্বাচনে ভোটের ফলাফলে এ মিথের প্রতিফলন ঘটেছে।
মাস কয়েক আগে আরিফুল হক লন্ডনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ প্রস্তাবের বিকল্প হিসেবে জিয়া পরিবারের কোনো সদস্যকে প্রার্থী করার কথাও বলেছিলেন। সেই সাক্ষাতের প্রায় পাঁচ মাস পর এবার সিলেট-১ আসনে নিজেই প্রচারে নামলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
বুধবার প্রচার শুরুতে এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ৩১ দফা সংবলিত প্রচারপত্র বিলি করা হয়। পাশাপাশি আরিফুল হক চৌধুরীর ‘নির্বাচনী পদযাত্রা’ শীর্ষক বিশেষ প্রচারপত্রও বিলি করা হয়। নির্বাচনী পদযাত্রায় বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
পদযাত্রার শুরুতে আরিফুল হক বলেন, ‘এই সিলেটে যে কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জেয়ারত করে শুরু হয়। আমার দল থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে সিলেট-১ আসনে ধানের শীষের প্রচারণায় নেমেছি।’
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় কতটুকু আশাবাদী? এ প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট আশাবাদী।’
নির্বাচনী পদযাত্রা শেষে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্রকাঠামো ৩১ দফা প্রচারের মাধ্যমে আমি আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলে-১ আসনের একজন প্রার্থী হিসেবে আজকে সাধারণ জনগণের কাছে দাবি তুলছি এবং আমার দলের কাছে নমিনেশন পাওয়ার জন্য আবেদন করছি। সিলেটের আপামর জনগণকে আহ্বান করেছিলাম আজকে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের পক্ষে সিলেট-১ আসনে আমি একজন প্রার্থী হিসেবে প্রচার অভিযান করব। আজকে আপনারা দেখেন শুধুমাত্র প্রচারাভিযানে হাজার হাজার মানুষ এসেছেন।’
সিলেট-১ আসনে নিজের মনোনয়ন শতভাগ নিশ্চিত দাবি করে আরিফুল হক বলেন, ‘আমাদের নেতা বলেছেন সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে। আমরা দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব। আমি সবসময় দলের ডিসিপ্লিন মেনে আসছি। আমি কখনো দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। ৪৭ বছর আমি এই সংগঠনের সঙ্গে আছি। আমাদের নেতা বলেছেন – জনগণের সম্পৃক্ততা জনগণের ভালোবাসা যার সঙ্গে থাকবে তিনি তাকেই নমিনেশন দেবেন। আমার সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা কতটুকু আছে সেটা আজকের প্রচারাভিযানে মানুষের ঢল দেখলে বুঝবেন। আমি মনে করি আমার দল যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটা মেনে নেব। কারণ আমরা সবাই ধানের ছড়ার।’
সিলেটের সঙ্গে উন্নয়নবৈষম্য সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সবাই দেখছেন সিলেটের সঙ্গে কী বৈষম্য হচ্ছে। গতকালকেও যে একনেকে বাজেট পাশ হয়েছে সেখানেও সিলেটের নাম নেই। বর্তমানে যে বৈষম্য হচ্ছে সেটা থেকে বাঁচতে হলে ধানের ছড়ার বিকল্প নেই। কারণ যখন বিএনপি ক্ষমতায় গেছে তখনই সিলেটের উন্নয়ন হয়েছে।’
বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-১ আসনে ২০১৮ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে তৎপর রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল মালিকের ছেলে। ২০১৮ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলেও জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ হেরে যাওয়াকে প্রার্থিতার দুর্বলতা বলে প্রকাশ হয়। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ব্যর্থতার বিষয়টি তুলে ধরে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী বদলেরও দাবি ছিল।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট বিভাগের ১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সিলেট-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ফাঁকা ছিল। আমি সেই ফাঁকা আসনটিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে প্রার্থী করার প্রস্তাব রেখে বলে এসেছি তিনি না হলে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী।’
সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব ও সিটি ভোটে দলীয় প্রতীক নিয়ে নৌকার সঙ্গে বিজয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘মহানগর ও সদর কেবল দলীয় নয়, সর্বদলীয় ভোটার রয়েছেন। আমি সর্বদলীয় ভোটে দুই-দুই বার বিজয়ী হওয়ার সাফল্য থেকে আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাই। বাকিটা দলের ইচ্ছা। আমার বিশ্বাস, ২০১৮ সালে দলীয় প্রার্থী হারার বিষয়টি বিবেচনায় এনে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। তবে এ বিষয়ে দলের যে কোনো সিদ্ধান্ত আমি অমান্য করব না।’
সিলেট সংবাদ/আবির






