জাতীয়তাবাদী পরিবারের পাশে আব্দুর রহিম মতছির

সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২৫, ১:৪৩ পূর্বাহ্ণকরোনাকাল থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত সকল দুর্যোগ দুর্দশায় জাতীয়তাবাদী পরিবারের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের অসহায় মানুষের পাশে আছেন আব্দুর রহিম মতছির। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির একজন অগ্রসৈনিক হিসাবে বারংবার মামলা হামলার শিকার হয়েছেন, দুঃসময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন নির্ভরতার প্রতিক হয়ে। অর্থ দিয়ে, নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে নিজের জীবনকে বারবার ঝুঁকিতে ফেলেছেন। অথচ সেই আব্দুর রহিম মতছির আজ নিজ দলে রীতিমতো কোনঠাসা!
তিনি বহুবার আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার বিনিময়ে লোভনীয় পদপদবীর প্রস্তাব পেয়েও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শত নির্যাতন নিপিড়নের মুখেও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ঝান্ডা উড়িয়েছেন বীরদর্পে।
অথচ এখন যখন বিএনপির সুসময় তখন সেই মতছির নিজ দলে চরম অবহেলিত। কঠিন দুঃসময়ে যারা তার সহযোগীতায় নিরাপদে সুরক্ষিত ছিলেন তারাই আজ তাকে কোনঠাসা করার পাঁয়তারায় লিপ্ত। যখন তাদের সহযোগীতা প্রয়োজন ছিল তখন তারা তা নিয়েছেন বিনা দ্বিধায়, অসঙ্কোচে। তখন একবারের জন্যও তাদের মনে হয়নি, যার সহযোগীতা নিচ্ছেন, ২০২৩ এ অনুষ্টিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার অপরাধে তিনি দল থেকে সাময়িক বহিস্কৃত! বিষয়টি বড়ই হাস্যকর।
এই সুবিধাভোগীরা গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মনে করেছিলেন বিএনপি ক্ষমতায় চলে এসেছে।
তাই তারা মতছিরের অতীত অবদান ভুলে গিয়ে তাকে প্রতিপক্ষ ভেবে নোংরা খেলায় মেতে উঠেন। হিংসাত্মক মনোভাবের বাস্তবায়ন ঘটাতে তারা বারবার বহিষ্কারের দোহাই দিয়ে তাকে দলীয় সভা সমাবেশ বা অন্যান্য প্রোগ্রাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অপৎপরতায় লিপ্ত হন। এমনকি, মতছিরের সহযোদ্ধা বন্ধু ছোট ভাই ও বিশাল কর্মী বাহিনীকেও দলের অঙ্গ সংগঠনের কমিটিতেও কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছেনা।
বিপরীতে দলের অঙ্গ সংগঠনের থানা ওয়ার্ড জেলা ও মহানগর কমিটিতে ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কর্মীকে জায়গা দেয়া হচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনকতো বটে, এমনকি দলের বিপর্যয়েরও কারণ হতে পারে যেকোনো সময়।
আব্দুর রহিম মতছিরের দোষ কী? তিনি তার কর্মী সমর্থক, বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনের পরামর্শ ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী এবং স্থানীয় আ’ লীগ নেতাদের চাপে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছিলেন। এ কারণে মামলা হামলা পুলিশী হয়রানি নির্যাতনসহ আরও অনেক শাস্তি পেতে হয়েছে তাকে। আর এমন অপরাধ শুধু মতছিরই নয়, যুগেযুগে কালেকালে আরও অনেক স্থানীয় বা জাতীয় নেতৃবৃন্দ করেছেন এবং সাময়িক শাস্তি শেষে আবারও দলের মূলধারায় স্থান করে নিয়েছেন।
বাংলাদেশে বহদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিৎ দলের জন্য নিঃস্বার্থ ভালবাসা বুকে লালন করা নিবেদিতপ্রাণ মতছিরসহ অন্য সকল নেতাকর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া।
কারণ, আজকের এই সুদিন চিরস্থায়ী নয়। আগামীতে আন্দোলন সংগ্রামের প্রয়োজন হবে বা হতে পারে। আর তখন মতছিরের মতো কর্মীবান্ধব নেতারও প্রয়োজন হবে সবচেয়ে বেশী।
নেতৃবৃন্দের বুঝা উচিৎ, সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভুল তারা করেছেন ঠিকই, কিন্তু ১৭ বছর স্বৈরাচার খুনি হাসিনার হামলা মামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও তারা জাতীয়তাবাদী আদর্শ ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন নি।
মতছির ইতিপূর্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বা দলীয় হাইকমাণ্ডের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। নিজের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কেও আদ্যপান্ত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনিসহ তার বিশাল কর্মী বাহিনীর প্রত্যাশা, তার ত্যাগ এবং দলীয় আনুগত্যের বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে মূল ধারার জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ প্রদান করা হবে।
আর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি তাদের উদাত্ত আহ্বান ও প্রত্যাশা, মানুষ ভুলভ্রান্তির উর্ধ্বে নয়। আব্দুর রহিম মতছিরের ছোট্টো একটি ভুলের কারণে তার সারা জীবনের ত্যাগ ও দলীয় আনুগত্যের যথাযত মূল্যায়ন করা হোক। এতে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অগ্রযাত্রা অবশ্যই আরও বেগবান হবে।
রাজনীতি/হা