সিলেট নগরে একসঙ্গে তিন সড়কে উন্নয়ন, যানজট-ভোগান্তি
আব্দুল হান্নান
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ
হকারমুক্ত হবার পরও সিলেটে যানজট আর জনভোগান্তি থেমে নেই। উন্নয়ন কাজে বিড়ম্বনা আর যত্র যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এর ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে রমজানে যানজট দূর করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে ( এসএমপি) ও নগর কর্তৃপক্ষ কাজ করছেন একযোগে।
সিলেট নগরের দরগাহ গেইট কোর্ট পয়েন্ট, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, তালতলা, এলাকায় যেসব সড়কে রাস্তার দুই পাশে যানজট লেগেই থাকতো, সেখানে রাস্তার দুই পাশ এখন পুরোই ফাঁকা। এক সপ্তাহ আগেও যে সড়কে সারি সারি ভ্যান আর হকারের দীর্ঘলাইন দেখা যেতো-তা আর চোখে পড়ছেনা। যেন দৃশ্যটা পুরোই বদলে গেছে। কখনও কখনও মনে হয় যেন এক স্বস্থির নগরের যাত্রা শুরু হয়েছে।
এই স্বস্থির মাঝে পবিত্র রমজানে নতুন ভোগান্তি হয়ে দেখা দিয়েছে সিলেট নগরের উন্নয়নযজ্ঞ। নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে একযোগে বৃহৎ গর্ত করে কালভার্ট নির্মাণ আর সড়ক সংস্কারের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে নগরের রিকাবীবাজার থেকে চৌহাট্টা সড়ক, আম্বরখানা পয়েন্ট, সোবহানিঘাট সড়কসহ একাধিক স্থানে গিয়ে দেখা যায় সেসব স্থানে নগর কর্তৃপক্ষের বড় কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে।
রিকাবীবাজার পয়েন্টের চৌহাট্টামুখি সড়কের এক পাশে ব্যারিকেড দিয়ে কাজ চলছে। পুরাতন মেডিকেল কলোনীর সম্মুখে ছড়ার সঙ্গে থাকা সংযোগ কালভার্ট ভেঙে বড়ো করা হচ্ছে। এ কালভার্টটি তৈরী করতে গতমাসে চৌহাট্টা থেকে রিকাবীবাজার অভিমুখি সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়। ঐ অংশের কাজ শেষ হওয়ার পর রিকাবীবাজার থেকে চৌহাট্টা অভিমুখি সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে।
অপরদিকে আম্বরখানা পয়েন্টে দেখা যায়, মসজিদের বিপরীত সড়কের কোনায় পয়েন্টে একটি বড় গর্ত করে ভূগর্ভস্থ কাজ চলছে। সেখানেও একটি কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। এ কারণে আম্বরখানা থেকে সুবিদবাজারমুখি রাস্তার মুখটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সুবিদবাজারগামী এবং বন্দরবাজার থেকে আম্বরখানাগামি গাড়িগুলো রাস্তার একপাশ ব্যবহার করতে পারছেনা।
ফলে যানজটের জন্য ‘খ্যাতি’ পাওয়া এই পয়েন্টে দিয়ে চলাচলকারীরা নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ইফতারির পূর্বে পহেলা রমজান তীব্র যানজট দেখা দেয় এখানে। এয়ারপোর্ট রোড, শাহী ঈদগাহ সড়ক চৌহাট্টা সড়ক, সুবিদবাজার সড়ক থেকে আসা গাড়িগুলোকে ঠায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আম্বরখানা পয়েন্টের কাজ গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে এ ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
নগরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সোবহানিঘাট। সেখানে বিশ্বরোড খ্যাত সড়কের গাড়িগুলো এসে এই পয়েন্টেই সব সময় আটকা পড়ে। এবার গত মাসখানেকের অধিক সময় ধরে সেখানে চলছে উন্নয়ন কাজ। সোবহানিঘাট থেকে নাইওরপুল পয়েন্টে পর্যন্ত সড়কটি পুরোই বন্ধ রেখে ভাঙ্গা সড়কটি আরসিসি ঢালাই করা হচ্ছে। সেখানেও একটি কালভার্ট নির্মণ করা হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন কাজের দৃশ্য চোখে পড়ায় সাধারণ মানুষও এসড়ক নিয়ে ভোগান্তি সাময়িক মেনেই নিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে ।
এভাবে সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ব্যস্ত থাকায় ঈদের পূর্বে নগরে যানজট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে পারে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। ফলে তারা এসব সমস্যা নিয়ে আগাম উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন নগর কর্তৃপক্ষ আর ট্রাফিক পুলিশের প্রতি।
এ প্রসঙ্গে এসএমপির ট্রাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, সিলেট নগরে এই মুহুর্তে বড় কোনো জ্যাম নেই। আমি নগর পুরোটা ঘুরেছি। তবে রমজানের মাঝামাঝি সময়ে যানজট বাড়তে পারে সে জন্য আমাদের পরিকল্পনাও আছে। আর নগর কর্তৃপক্ষ কিংবা সড়ক ও জনপথ যে কাজগুলো করছে সেসব ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আমরা আশা করছি রমজান শেষ হওয়ার আগেই সবগুলো উন্নয়ন কাজ তারা শেষ করতে পারবেন। এমনটি আমাদেরকে আশ্বস্থ করেছেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, আম্বরখানার কালভার্টের কাজ,রিকাবীবাজার সড়কের মাদার কেয়ারের পাশের কালভার্টের কাজ সোবহানিঘাটের কাজ ঈদের আগেই শেষ হবে। শুধু দরগাহ গেইটের কাজটা একটু বিলম্ব হতে পারে। তাও আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা যায়। তিনি বলেন, সবাইকে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। জনসাধারণের কষ্ট হচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি। সে লক্ষেই কাজ করছি।
সিলেটসংবাদ/হা





