হরতাল-অবরোধের অজুহাতে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি
মইনুল হাসান আবির:
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ৩:৫৫ অপরাহ্ণ
বিএনপি-জামায়াতের কেন্দ্র ঘোষিত তিন দিনের অবরোধের শেষ দিন আজ। অবরোধের দ্বিতীয় দিনের পাশাপাশি সিলেটে ছিল যুবদলের ডাকা হরতালও। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর হরতালের অজুহাতে সারাদেশের ন্যায় সিলেটে আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। পণ্যমূল্যবৃদ্ধির জন্য কখনও পণ্য সংকট, আবার কখনও পরিবহন সংকটকে দায়ী করে থাকেন।
গত মঙ্গলবার ও বুধবার অবরোধের মতো কর্মসূচি আর গত রবিবার হরতালের অজুহাতে এবার আরেকদফা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আবার আমদানি নির্ভর পণ্য না হলেও মূল্যবৃদ্ধির জন্য কখনও ডলার সংকটকেও দায়ী করা হয়। এবার পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য হরতালকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ী, বলছেন রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা। সিলেটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বুধবার সিলেটের বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। ক্রেতারা দাম নিয়ে মুলোমুলি করতে গেলে খুচরা বিক্রেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, দাম আরও বাড়তে পারে। কোনও কারণ ছাড়াই বেড়েছে চাল ও পেঁয়াজের দামও। অস্থির করা ডিমের দাম এখনও আগের দামেই। যা অনেক আগেই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে চাল, আলু, ডিম ও পেঁয়াজের দাম ঠিক করে দিলেও তা কার্যকর করা যায়নি একদিনের জন্যও।
সিলেট সিটির ভিতরে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা জাতের বিআর ২৮ চালের দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে; যা ৫২-৫৩ টাকা ছিল। সরু চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৭২-৭৫ টাকা আবার প্রকার ভেদে তা ৮০ থেকে ৮৬ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি বাছাই করা পেঁয়াজের দাম উঠেছে ১৩০ টাকা পর্যন্ত; যা গত সপ্তাহের থেকে কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা বেশি। আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও সরকারের বেঁধে দেওয়া পেঁয়াজের দর ছিল প্রতি কেজি ৬৫ টাকা। বাজারে আলুর দাম উঠেছে কেজিপ্রতি ৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেশি। আর সরকার নির্ধারিত আলুর দাম প্রতি কেজি ৩৬ টাকা। একইভাবে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে এসব পণ্যের দাম এমন সময় বেড়েছে যখন বাজারে প্রায় সব ধরনের শাক সবজি ও মাছের দাম আগে থেকেই বেড়ে রয়েছে।
মদিনা মার্কেটে বাজার করতে আসা জুনেদ আহমেদ জুয়েল জানান, আমি একজন বেসরকারী কর্মজীবী সামান্য বেতনে চাকুরী করি। পরিবারকে সাথে নিয়ে শহরে ছোট বাসা নিয়ে থাকি। পরিবারকে সাথে নিয়ে চলতে প্রতি মাসে হিমসিম খেতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে কয়দিন পর না খেয়ে থাকতে হবে।
নিত্যপণ্যের এই মুল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, হরতালের কারণে বাজার খারাপ হরতাল-অবরোধের অজুহাতে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। কেনা-বেচা হচ্ছে না সেভাবে। যেটুকু হচ্ছে তা খুবই কম। কারণ বাজারে পণ্যের সংকট রয়েছে। হরতালে বাজারে পণ্য আসতে পারছে না। পরিবহন সংকট। তার উপর ভাড়া বেশি। এসব কারণেই মূলত পণ্যের দাম বেশি বেড়েছে।
সারাদেশের বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের আগাম শাকসবজি। মুলা, বেগুন, লাউ, শিম, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও পটলসহ নানা সবজি বাজারে আসছে। সপ্তাহখানেক আগেও শাকসবজির বাজার ছিল চড়া। দুই-তিন দিন আগে খানিকটা কমেছিল। তবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরিবহন খরচ বাড়ায়, বেড়ে গেছে শাকসবজির দাম। এর প্রভাব পড়ছে সারাদেশের ক্রেতাদের ওপর।
সিলেট/আবির





