অবশেষে খুলছে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র, দারুণ খুশি ব্যবসায়ীরা!

সিকডে
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২১, ৫:০০ অপরাহ্ণপাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র। এতে পর্যটনকেন্দ্রে যেমন ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য, তেমনি ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন বুনছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে প্রথম দিনে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল কম।
জানা গেছে, সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রকে স্বরূপে ফেরাতে নতুন করে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। খাবারের হোটেল ব্যবসায়ী, ফটোগ্রাফার, ছাতা-বেঞ্চ ব্যবসায়ী, সাঁতার কাটার টিউব, চা-পানের দোকানদার, নৌকার মাঝিসহ পর্যটনকেন্দ্রিক সকল ব্যবসায়ী নিজ নিজ ব্যবসাকে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছেন। তবে মাস্ক ছাড়া সাদা পাথর যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন আচার্য্য।
নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় যারা রয়েছেন, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে পর্যটকদের সাদা পাথর প্রবেশে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই নির্দেশনা রয়েছে। ভোলাগঞ্জ দশ নম্বর নৌকাঘাটের দায়িত্বে থাকা সুমন আহমদ জানান, আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি পালনে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া পর্যটকদের নৌকায় উঠানো হচ্ছে না। খাবারের হোটেল ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ জানান, দীর্ঘদিন পর পর্যটনকেন্দ্র খোলায় আমরা খুশি। আশা করছি পর্যটনকেন্দ্র আর বন্ধ হবে না। এবার আমরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।
নৌকা চালক আতাউর রহমান, আজিজ, ফারুক, রফিকসহ আরও অনেকে জানান, অনেক দিন সাদা পাথর বন্ধ থাকায় আমরা নৌকা চালাতে পারিনি। খুলে দেওয়ায় আবার নৌকা চালাতে পারছি। সংসার চলবে আগের মতো করে। দেখা হবে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের সাথে। আমরা চেষ্টা করব আগে যেমন পর্যটকদের সেবা দিয়েছি, তার চেয়ে বেশি দিতে। যাতে ঘুরতে আসা মানুষগুলো তৃপ্তি নিয়ে ঘুরতে পারে। দোকানদার সিরাজুল জানান, অনেক দিন ধরে বেকার হয়ে বসে আছি। কোনো কাজকর্ম ছিল না। পর্যটনকেন্দ্র খোলায় আয়ের পথ খুলেছে। কোম্পানীগঞ্জ ট্যুরিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম জানান, করোনায় ক্ষতি অপূরণীয়। এখন খুলে দেওয়ার কারণে লোকজন আসা শুরু করেছে। যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে, তাহলে আগের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সফাত উল্লাহ, লিটন আহমদ, সাজন ও রোবেল আহমদ বলেন, এখন ভরা মৌসুম। অথচ আমাদের বেচাকেনা নেই বললেই চলে। গত বছরেও করোনার কারণে সাদা পাথর বন্ধ ছিল। আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। এবারও আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। লকডাউন আবার দেওয়া হলে আমাদের ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে। চা পাতা বিক্রেতা রুহুল আমিন জানান, পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আবার শুরু করব ভাবছি। সাদা পাথর পর্যটন নৌকা ঘাটের ইজারাদার দিলোয়ার মাহমুদ রিপন বলেন, প্রায় দেড় কোটি টাকা ম‚ল্যে ঘাট ইজারা নিয়েছি। বছরের চার মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ঘাট চালু ছিল মাত্র দশ থেকে পনেরদিন। এভাবে বন্ধ থাকলে আমাদের লোকসান হবে। ভবিষ্যতে আর লকডাউন না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র চালু রাখার দাবি এ ব্যবসায়ীর।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল থেকে কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে আবারো খুলে দেয়া হয়েছে হোটেল-মোটেলগুলো। ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটক আপ্যায়নের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।