দিলদার হোসেন সেলিম ও তাঁর রাজনীতি :বশির আহমদ জুয়েল
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০২১, ৫:১৭ অপরাহ্ণসিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতি কেবল দেশেই সীমাবদ্ধ নয়; বিশ্বময় এর ধারা অব্যাহত রেখেছে সিলেটবাসী। বৃহত্তর সিলেট বার বার ধন্য হয়েছে সর্ব দলীয় জাতীয় নেতাদের পদাচারনায়। দিলদার হোসেন সেলিম তাদের একজন। রাজনীতির বাইরে সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে সর্বত্র।
দিলদার হোসেন সেলিম কেবল জৈন্তা-গোয়াইনঘাট (সিলেট-৪) এর এমপি ছিলেন না তিনি জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
কর্মের মূল্যায়নও তিনি পেয়েছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাটি ও মানুষের নেতা হিসেবে দিলদার হোসেন সেলিম গড়ে উঠেছেন ছাত্র জীবন থেকেই। রাজনৈতিক মেধাবী হিসেবে তিনি নিজেকে প্রমান করেছেন বার বার।
ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে এমসি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জিএস নির্বাচিত হন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগ থেকে এমসি কলেজে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশ গ্রহন করেন। তিনি একাত্তরের সম্মুখ সমরের এক যোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলদার হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে প্রথম এডিসি জেনারেলের উপর হামলার মাধ্যমে সিলেটের ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে ।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হবার পর সেলিম আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের হাত ধরে তিনি বিএনপির রাজনীতি শুরু করেন। অংশ নেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
নির্বাচিত হন সাংসদ হিসেবে। দিলদার হোসেন সেলিম এক বিশাল মনের অধিকারী বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন। এ কথাটা তাঁর দল ছাড়াও অন্যান্য দলের নেতা কর্মীরাও স্বীকার করবেন।
তিনি দীর্ঘদিন সিলেট রেড ক্রীসেন্ট সোসাইটি, সিলেট ইউনিট ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্হার সাধারন সম্পাদক ছিলেন। সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তিনি ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িত রেখেছেন। ছাত্র যুবাদের কাঁধে কাধ মিলিয়ে নিজের বয়সকে তারুণ্যে রূপ দিয়েছেন। পুলিশি লাঠিচার্য কিংবা টিয়ার গ্যাস মোকাবিলা করে রাজপথে আন্দোলন করেছেন।
দিলদার হোসেন সেলিমের মৃত্যুতে বিএনপি একজন নিবেদিত প্রাণ রাজনৈতিক নেতাকে হারালো। সিলেটবাসী হারালো এক অকৃত্রিম বন্ধুকে। সিলেট বিএনপিতে আর একজন সেলিম কখনোই সৃষ্টি হবে না। দিলদার হোসেন সেলিমদের মৃত্যু নেই।
তাঁরা আজীবন বেঁচে থাকেন আপন কর্মে। নবীন রাজনৈতিক কর্মী ও নেতারাও তাঁদের কাছে থেকে শিক্ষা নিবেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন। এই হোক আমাদের প্রত্যাশা। বশির আহমদ জুয়েল, সম্পাদক- ছন্দালাপ (ছড়াসাহিত্যের ছোটকাগজ)