বিশ্ব অর্থনীতিকে লণ্ড-ভণ্ড করে দিয়েছে করোনা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম শনাক্তের পরই প্রথম আঘাত আসে আন্তর্জাতিক পরিবহন খাতে। অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়, সব দেশের সীমান্ত। বন্ধ হয় আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল। লোকসানে পড়ে বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ বিমান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান।
বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজারে। যোগানের বিপরীতে চাহিদা কমতে থাকায় শূন্যের কাছাকাছি নামে দাম। উৎপাদন ও সরবরাহ কমানোরসহ নানা পদক্ষেপের পর ধীরে ধীরে উন্নতি হয় পরিস্থিতির।
সময়ের ব্যবধানে বিমান চলাচল ও তেলের বাজারে সুবাতাস লাগলেও> করোনার আঘাতে এখনো ধুঁকছে পর্যটন খাত। পুরোপুরি চালু হয়নি ভিসা অনুমোদন প্রক্রিয়া। পর্যটক উপস্থিতি প্রায় শূন্যে নামায় বিভিন্ন দেশে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু হোটেল-মোটেল।
স্বর্ণের বাজারেও দেখা গেছে অস্থিরতা। বছরের বেশিরভাগ সময় বেড়েছে দাম। সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্যের রেকর্ড হয়, ২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকে। বছর ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বাড়ে অন্তত ১০ শতাংশ।
সর্বোপরি, নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। তিন মাসের বেশি সময় বন্ধ ছিলো পণ্য আমদানি-রপ্তানি। বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে ওষুধের সংকট। যার প্রভাবে বন্ধ হয়েছে একের পর এক বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান।
ক্ষুদ্র শিল্প; খুচরা বিক্রিতেও স্পষ্ট ছিলো করোনার আঘাত। ক্রেতা সংকটে বন্ধ হয়েছে জেসি পেনির মতো যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ চেইন সুপারশপ ব্র্যান্ড। একের পর এক আউটলেট বন্ধ করে যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের খুচরা পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান।
করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জনসাধারণের আয়েও। বিশ্বব্যাপী কাজ হারিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক কোটি মানুষ। তাদের কেউ কেউ নতুন কাজের যোগ দিলেও অর্থনীতি থেকে ছিটকে পড়েছেন অনেকেই।
এতো খারাপের মাঝেও ছিলো কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিত। গেলো এক বছরে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে। অ্যামাজন, আলিবাবার মতো শীর্ষ ই-শপ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর ছিলো ঊর্ধ্বমুখী।
তবে খুব বেশি ভালো সময় কাটেনি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে। গুগল, ফেসবুক, টেসলা, সৌদি আরামকোর মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর কমেছে। প্রভাব পড়েছে সেগুলোর লভ্যাংশ বণ্টনেও।