যে কারনে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিগঞ্জে প্রয়োজন
সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ৫:২১ অপরাহ্ণসামিউল কবির:
সুনামগঞ্জ জেলা সিলেট বিভাগের একটি হাওরবেষ্টিত সীমান্তবর্তী জনপদ। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কূল ঘেঁষা পাহাড়ের পাদদেশে ১১ টি উপজেলা ও একটি থানা নিয়ে গঠিত। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ অঞ্চলে মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছে। রয়েছে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও পর্যটন খ্যাতির জন্য সুনামগঞ্জ জেলা একটি অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল।
এছাড়া একটি নিজস্ব স্লোগান রয়েছে এ জেলার যেমন “মৎস পাথর ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ” আমরা জানি মূলত পাকিস্তান আমল থেকে সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ প্রভৃতি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন কবি ও মরমী সাধক, হাসন রাজা, রাধারমন, দুর্বিনশাহ, শাহ আব্দুল করিম উল্লেখযোগ্য। সুনামগঞ্জ জেলার কৃষি ও অর্থনীতি বড় যোগান দিয়ে আসতেছে বাংলাদেশকে, রেমিটেন্স যোদ্ধারা তো আছেনই।
সুনামগঞ্জে শুধু মরমি সাধকরাই নয় জন্মেছিলেন অনেক গুণী রাজনীতিবিদ, যার মধ্যে হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, আব্দুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। তাঁরা সবাই জাতীয় নেতা ছিলেন; তো সুনামগঞ্জের জন্য কে কি করেছিলেন? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে ধরছে না, এমনও হতে পারে আমার মনে পড়ছে না বা আমার ভুলও হতে পারে, যদি ভুল হয়; সেটা সংখ্যায় কম হতে পারে- হয়তো সেটা আমি কিংবা যে কেউ গুনায়ও ধরছিনা!
এর ঠিক ব্যতিক্রম একজন কালের জাদুকর। বলা যায় হাওর পাড়ের স্বপ্নের সারথি এ যেনো আমাদের সবেধন নীলমনি! আমাদের সবার প্রিয় নেতা, সুনামগঞ্জ তথা সিলেটবাসীর গর্ব। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের পরপর তিন তিনবারের নির্বাচিত এম.পি, ক্লিন ইমেজধারী ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সফল পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান। যিনি রাজনীতি বলতে বুঝেন সাধারণ মানুষের উন্নয়ন, যার রাজনীতির লক্ষ্য হলো জনগণের উন্নয়ন, তথা হাওরপাড়ের উন্নয়ন।
এবার আসা যাক তিনি আমাদের জন্য কি কি করেছেন তার যদি উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরলে লিখে শেষ করা যাবেনা। তারপরও উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় উল্লেখ না করলে নয়, সংসদীয় এরিয়া দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা হলো তাঁর নিজ উপজেলা। সেটা কে তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ ও মডেল উপজেলার মর্যাদা দিয়েছেন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন আরও হচ্ছে এই উপজেলায়। বৃহত্তর আকারে পুরো সুনামগঞ্জ জেলার জন্য তিনি নিয়ে এসেছেন “সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল” যেটি সদরের মদনপুর নামক স্থানে স্থাপিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে তার অবকাঠামোগত কাজও শুরু হয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জে রেল লাইনের সম্প্রসারনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর ব্রিজ, যাদুকাটা নদীর উপর ব্রিজ, দোয়ারা ছাতক সেতু এই সমস্ত বড় বড় কাজ প্রায় সমাপ্ত হবার পথে। আরও রয়েছে দিরাই-শাল্লা সড়কের উন্নয়ন প্রকল্প পাস। এছাড়া তিনি সুনামগঞ্জগঞ্জ বাসীর জন্য একটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট নিয়ে এসেছেন। ৪ টি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার মানুষের কথা বিবেচনা করে এটি জেলার মধ্যেবর্তী স্থান শান্তিগঞ্জে স্থাপন করা হচ্ছে। সুনামগঞ্জের ডলুরায় ইমিগ্রেসন সুবিধাসহ স্থলবন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। সুরমা নদীর ধারারগাঁও-হালুয়ারঘাট অংশে সেতু হবে। এই উন্নয়ন কাজগুলো সমাপ্ত হলে সুনামগঞ্জ হবে একটি ট্রানজিট শহর।
এছাড়াও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব দিকে একটি বাইপাস সড়ক হবে, এই সড়ক হলে শহর দক্ষিণ দিকে যেভাবে বাড়ছে পূর্বদিকেও বাড়বে।
শাল্লা-জলসুখা ও আজমিরিগঞ্জ সড়কে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি সজ্জন এই রাজনীতিবীদের হাত ধরে সুনামগঞ্জে নানামুখী উন্নয়ন হচ্ছে।
আচ্ছা হাওরে ১৩ কিলোমিটার উড়াল সেতু হবে, সুনামগঞ্জে রেল লাইন হবে এই স্বপ্ন টা আমাদের দেখাচ্ছেন কে? এর আগে কি কেউ এমন স্বপ্ন দেখাতে পেরেছেন? কেউ কি বলতে পারবেন? নির্বুদ্ধিতা আর হিংসে যার মাঝে আছে সে আবার বলবে এগুলো প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন। যদি তাই হয় তাহলে পরিকল্পনামন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদের কাজ কি? বরং জানা উচিত প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ গুলা বাগিয়ে নিয়ে আসা জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটা তাদের অন্যতম কাজ। অথচ আমাদের মস্তিষ্কের ভাবনা কত দূর্বল। দেখুন, একজন কে খাটো করো দিয়ে বলি এটা প্রধানমন্ত্রীর কাজ! হ্যাঁ, স্বীকার করছি এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইশতেহার বা কাজ, কিন্তু নিজ জেলার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন কাজ নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশে এমন মন্ত্রী পাওয়া বিরল।
কত কয়েকদিন থেকে ফেইসবুক সোশ্যাল মিডিয়া, বিভিন্ন অনলাইন নিউজে একটা বিতর্ক চলছে পুরো জেলাজুড়ে..
উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান এম এম মান্নানেই নিয়ে আসলেন আমাদের হাওরের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ কিন্তু বিধিবাম এটা কোথায় স্থাপিত হবে এর স্থান নির্ধারণ নিয়ে শুরু হয়ে গেলো মহা বিতর্ক! ভাবুন আমরা কতটা অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছি, যে মানুষটি আমাদের জন্য এতো কষ্ট করলেন উনাকে কোন সুযোগই দিলাম না। মনে হয় উনাকে জিজ্ঞেসই করা যাইতো না, যে মাননীয় মন্ত্রী আপনি কি চিন্তা করছেন ইহা কোথায় স্থাপিত হওয়া উচিত? তখন উনিই যে সিদ্ধান্ত দিতেন আমাদের আমরা সেটা মেনে নিতাম । কারণ তিনি তো আমাদের নেতাই নয় শুধু একজন খাটি অভিভাবকও বটে। কোন অভিভাবক তার ভবিষ্যত উত্তরাধিকারীর জন্য কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। অথচ আমাদের এক অভিভাবক কে কি আমরা সঠিক মর্যাদা দিতে পেরেছি? ভাবা যায়, সরকারের একটা উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দিতে এর জন্য একটা মানববন্ধন সংঘটিত হয়ে গেলো!
১.এদিকে যিনি এই আন্দোলন এর নেতৃত্ব দিলেন তিনি বিরোধী দলের একজন এমপি। বিরোধী দলের আচরণ তো বিরোধী দলের মতই হবে। সম্মান রেখেই বলছি, এই বিরোধী দলের এমপির আরেক ভাই, জানিনা কতটুকু সত্য, তবে শুনেছি তিনি নাকি ১/১১ এর কুশীলব, মাইনাস ২ ফর্মুলার বিশ্বাসী ছিলেন। বর্তমানে তিনি দেশের একটি নামীদামী ও জনপ্রিয় পত্রিকার সম্পাদক, উনার লেখার সমালোচনা করার যোগ্যতা আমার নাই, বা উনার পর্যায়ে আমি যেতেও পারেনী। তবে সত্য আকারে কিছু বলা দরকার। এমন আমরা অতীতেও দেখেছি, যেমন- নিজের পত্রিকার সম্পাদক হলে যা মন চায় তাই লিখা যায়, সাথে সস্তা জনপ্রিয়তাও অর্জন করা যায়। নিজেই নিজের লেখা প্রুপ দেখা আর পারমিট করা যায়! পরে তা পাবলিষ্ট করা যায়! বাহ!
২. গত কয়েকদিন আগে উনার নিজ পত্রিকাতেই একটা লেখার শিরোনাম আমার কাছে মনে হয়েছে বাক্যে ও শব্দ চয়নের মিলন ঘটেনি! দুজন ব্যক্তিকে নিয়ে এক শিরোনামে যে শব্দ বাক্যে হলো; বিষয়টি বুঝতে আমার অনেক সময় লেগেছে, হয়তো সবার মতো আমি জ্ঞানী পাঠক নই, তবে যাহারা সত্যিকারের পাঠক তাহারা হয়তো এটা ঠিকই বুঝেছেন! আর রয়েছে লেখার ভিতরে অজস্র শব্দ আর বাক্যের বানান ভুল। আচ্ছা এখানে ভুল টা ধরবে কে? বিষয়টা এমন হয়ে গেছে যেনো আমার দেশে তো আমিই রাজা! তাছাড়া লেখার মধ্যে হাওর রত্ন ও বর্তমান সরকারের একজন সফল মন্ত্রীকে নিয়ে তিনি অনেক ভুল তথ্য দিয়েছেন। উনার উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে অনেক মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
আরেকটা বিষয়ও আমরা জানি তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেও একদিন অবসরের যাওয়ার কথা বলেছিলেন। এটা বিভিন্ন পত্রিকা তে এসেছিলো। পাশাপাশি আরও বলেন অবসরে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যেনো হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জ ঘুরতে আসেন।
এ সকল কর্মকান্ডের পর আমরা দেখছি ফেইসবুকে উনাকে কে নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। আমরা আরও জেনেছি এবছরই এক পর্ন তারকার নামে একটি শিরোনাম দিয়ে তিনি দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছিলেন! এবার বোধ হয় আমি বলি কি, যিনি এই পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, তিনি নিশ্চয়ই এই বিষয়টি আবারও ভেবে দেখবেন।
৩. এবার আসা যাক বিরোধী দলীয় এই এমপি কেন এই উন্নয়ন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান করলেন। আমি বলবো মূলত তিনি এখানে রাজনীতিই করতে এসেছেন, এতে উনার কি লাভ আর কি লস হলো ইতিমধ্যে তিনি তা বুঝে নিতে পেরেছেন। বড় কথা হলো এই রাজনীতির রেশ কোথায় গিয়ে থামবে খোদাই ভালই জানেন। তবে একটা বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় স্থাপন করা হলে ভাল হয় নিশ্চয়ই তিনি সেটা জানেন।
আচ্ছা বলুন তো, চট্রগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষত্ব কি? এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তো তার শহরের থেকে অনেক বাহিরে। একদম পাহাড়ের কাছে, হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী প্রতিদিন সেই শাটল ট্রেনে যাতায়াত করে, এটাই এর বিশেষত্ব! এই বিশেষত্বের কারনে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টি সবার কাছে আলাদা মর্যাদা পেয়েছে। এই ঐতিহ্যবাহি শাটল ট্রেনে পাড়ি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগে। দেখুন জানুন, আর বুঝুন একটা নন প্রোডাক্টিব স্থান কিভাবে প্রোডাক্টিব হয়ে যায় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ই তার প্রমান!
আমাদের নীতি নির্ধারকরা যদি অন্তত ৫০০ বছরের পরিকল্পনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে আরও শহরের বাহিরে নিয়ে যেতে পারতেন, তখন এর লেখাপড়ার মান আরও ভাল হতো। আজ সেই স্থানে মাস্তানের দাপট থাকতোনা! আজকাল অনেকেই বলতে শোনি, যে লেখাপড়ার সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! এর একটাই কারন ঢাকার মুল শহর থেকে অনেক দুরে এর অবস্থান।
৪. আমাদের মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এমন দূরদর্শী পরিকল্পনাই করেছিলেন। আপনারা বুঝে না বুঝে স্বজ্ঞানে অজ্ঞানে এর বিরোধীতা শুরু করে দিলেন। আচ্ছা আপনাদের দাবি টা কি? বিশ্ববিদ্যালয় সদর উপজেলায় স্থাপন করতে হবে; অন্যান্য উপজেলার মতো সদরও একটা উপজেলা। তাছাড়া সদর টা তো নিজেই একটা শহর! তাহলে কি আপনারা শহরকেই শহর বানাতে চান? বিশ্ববিদ্যালয় শহরে হলে উপকার টা কি? যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয় শহরে হলে মারাত্মক একটা অপকার আছে। সেখানে প্রতিদিন মাস্তান প্রমোট হবে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, প্রভাব বলয় সৃষ্টি হবে, মাস্তাদের দখলে ক্যাম্পাস চলে যাবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান থাকবে। উদাহরণ হিসেব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে আমরা দেখতে পারি।
৫. সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আসছেন আমাদের হাওর রত্ন, এম এ মান্নান। তিনি যেখানেই উপযুক্ত স্থান মনে করেন সেখানে স্থাপিত হোক বিশ্ববিদ্যালয়। আর সদর উপজেলার সবাই নয় কিছু অংশের মানুষ মনে মনে চাচ্ছেন সদরে হোক। মনে রাখবেন, এমন দাবি শাল্লা ও ধর্মপাশার মানুষও করতে পারে। কারণ তাহারাও এ জেলার নাগরিক। কিন্তু জেলা শহরের সদরেই যে করতে হবে, এমন কথা কোন আইনে বলা আছে? এটি সুনামগঞ্জ জেলার যেকোন স্থানেই এটা স্থাপিত হতে পারে! তবে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা হলো বর্তমানে সুনামগঞ্জের পুরো জেলার মধ্যে একটি ইমার্জিং অঞ্চল।
এই কথার মধ্যে অনেকের দ্বিমত হতে পারে আবার নাও হতে পারে! ভৌগোলিক ভাবেই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পুরো জেলার মধ্যেবর্তী স্থান, বিশ্বাস না হলে আপনে গুগলে গিয়ে মানচিত্র দেখে আসতে পারেন। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ এগিয়ে রয়েছে। আপনার এলাকা ভিত্তিক চিন্তা করলে হবে না। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার সাথে যোগাযোগ এর ক্ষেত্রে সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে কোন উপজেলা এগিয়ে আছে? উত্তর একটাই দক্ষিণ সুনামগঞ্জ। এখানে পর্যাপ্ত ভুমির সুব্যবস্থা রয়েছে, আর বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের গানের সাথে হাওরের সুবিশাল ঘ্রাণ ও বাতাস তো এই দক্ষিণেই রয়েছে।
৬. সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে যদি একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় তাহলে সুনামগঞ্জ সদর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হবে। আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিপুল পরিবর্তন আসবে। দুই উপজেলা মিলে একাকার হবে, হবে একটা বড় শহর।হাওরপাড়ের সবার ভাগ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগও হবে না! তারপরও এই অঞ্চলের কিছু মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা আলোকিত মানুষ হয়ে দেশসেবায় নিজেকে ব্রত রাখার সুযোগ পাবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৫ জুলাই ঘোষণা করেছেন, প্রতিটি উপজেলায় সরকারি স্কুল এবং প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার আলোকে ধারাবাহিকভাবে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ এসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে বা স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে সংসদে বিল পাস হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনামন্ত্রীর অক্লান্ত প্রচেষ্ঠায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও অনেকদুর অগ্রসর হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পরিকল্পনান্ত্রীর জোর প্রচেষ্ঠার ফলে চলতি বছরের ০২ মার্চ সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সুবিপ্রবি) বিল মন্ত্রীসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এরপর গত ০৭ সেপ্টেম্বর বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়। সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর এ বিলটি সংসদের স্থায়ী কমিটির সভায় উত্থাপিত হয়। এবং বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জে স্থাপন হওয়ার অনুমোদন পায় যেটি আগামী সংসদীয় অধিবেশনে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জায়গা দক্ষিণ সুনামগঞ্জে নির্ধারনের সিদ্ধান্তটি যথোপযোগী হওয়ায় এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
৭.আর আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষিত হোক। তাদের জ্ঞানের দ্বার উন্মোচিত হোক, দূর্বা ঘাস ও পুষ্পের ন্যায়। তবে হাওরের ছেলেময়েরা যাতে ভার্সিটি তে পড়ার সুযোগ পায় সেজন্য একটা হাওর কোটা রাখা যেতে পারে। তার কারণ আমরা তো অন্যান্য জেলার ছেলেমেয়েদের মতো লেখাপড়ার সুযোগ পাইনা। আমাদের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় দারিদ্র্যতা ও প্রাকৃতিক বৈরি পরিবেশের সাথে। তবেই এই অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও তার প্রতিষ্ঠা সার্থক হবে।
তাই, আজ আসুন মানুষকে যদি বিশুদ্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে পবিত্র করে তোলা হয়, আমরাও একটু পবিত্র হয়ে যাই। জেলার পশ্চাৎপদ শিক্ষা ব্যবস্থা কে এগিয়ে নিয়ে যেতে, সমাজ বা আঞ্চলিক ও রাজনীতির দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে এগিয়ে যাই। তাই জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের হাওররত্ন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কে আরও বেশি করে সহযোগিতা করি আর এগিয়ে যাই।
লেখকঃ সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী।
. . . . . . . . .