কারা অভ্যন্তরে ওরা কারা!

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ নভেম্বর ২০১৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ণদেশের বিভিন্ন কারাগারে একশ্রেণির কর্মকর্তা ও কারারক্ষী জঙ্গি তথ্য আদান প্রদান ও স্বাধীনতা বিরোধী গ্রুপের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের অনেক দোসর বর্তমানে কারা অধিদফতর এবং বিভিন্ন কারাগারে কর্মরত আছেন। তারা কারাবন্দি জঙ্গি এবং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বাইরের তথ্য আদান-প্রদান করছেন দীর্ঘদিন ধরে। ইতিমধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের কার্যক্রম অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, জঙ্গিদের সঙ্গে সাক্ষাত্কার প্রার্থী হিসেবে জঙ্গি নেতাকর্মীদের যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেয় এসব কর্মকর্তা। মোবাইল ফোনেও কথা বলার সুযোগ করে দেয়। জানা গেছে, জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতকারীদের ওইসব স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকর্তারা ভিআইপি মর্যাদায় দেখা করার ব্যবস্থা করে দেন। অথচ কারাগারে বসেই জঙ্গি নেতারা নানা নাশকতার পরিকল্পনা করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করেন সরকার ও স্বাধীনতা বিরোধী সেই সব কর্মকর্তারা। এছাড়া এর আগে কারা অভ্যন্তরে মাদক ব্যবসারও অভিযোগ উঠেছিল। কারাবন্দি জঙ্গিদের পরিকল্পনায় ব্লগার-প্রকাশক-লেখক এবং সুশীল সমাজের মানুষদের ‘টার্গেট কিলিং’ করা হচ্ছে কি না সে বিষয়টি নিয়েও অনুসন্ধান করছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভেনিউতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়। পরদিন একই রকম গ্রেনেড ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তে জানা যায়, কারারক্ষী সোহেল মন্ডলের মাধ্যমে ওই গ্রেনেড কারাগারের অভ্যন্তরে যায়। সেই সোহেল মন্ডলকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে ওই ঘটনার পর বিদেশ পালিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারাগারে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতা বিরোধী ওইসব কর্মকর্তাই তাকে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে ।
একটি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার সময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কর্নেল ফারুকসহ অন্যান্যরা ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। জঙ্গিরা একই কায়দায় কারাগারে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কারাগার থেকে বের করার ষড়যন্ত্র করেছিল।
এদিকে এসব কর্মকান্ড ছাড়াও কারাগারে বন্দীদের খাবার সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা। বন্দীদের নিন্মমানের খাবার পরিবেশন করার কারণে তারা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত আইজি (প্রিজন) কর্নেল ফজলুল কবীর বলেন, পূর্ব অনুমতি নিয়ে কারাবন্দি জঙ্গি নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুধুমাত্র তাদের পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সাক্ষত্প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা নেয়া হয়। এছাড়া কারা কর্মকর্তা বা রক্ষীদের মাধ্যেমে কোন তথ্য বাইরে যাওয়া কোন সুযোগ নেই। কারণ সব কারাগারেই গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কারাগারে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। তাই কোন বিতর্কিত ব্যক্তির কারা কর্মকর্তা হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
. . . . . . . . .