প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যা করে নিজে ফেঁসে গেলেন

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০১৫, ৯:১৯ পূর্বাহ্ণহবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামের আলোচিত হাফেজ আবু তাহের ওরপে টুক্কা মোল্লা এবার প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজ স্ত্রী হোসনা বেগমকে হত্যা করলেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে স্বামী টুক্কা মোল্লাকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। এর আগে তিনি একই কারনে এক শিশু সন্তানকে চুরি করে হত্যা করে মামলা এবং নিজের শিশুকে লুকিয়ে রেখে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করে নিজেই ফেঁসে গিয়েছিলেন। আবু তাহেরের ৪ জন স্ত্রী রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চারিনাও গ্রামের হাফজ আবু তাহের ওরপে টুক্কা মোল্লার সাথে একই গ্রামের নজিবুর রহমান চৌধুরীর পরিবারের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। গতকাল শনিবার সকালে আবু তাহের তার স্ত্রী হোসনা বেগমকে হত্যা করে নজিবুর রহমানের পরিবারের একটি জমিতে ফেলে রেখে পুলিশকে কবর দেয়। কিন্তু পুলিশ এই খবরে সেখানে না গেলে বিকেলে আবু তাহের নিজেই লাশ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত ডাক্তাররা লাশে কয়েকটি ফিকলের আঘাত দেখতে পেলেও তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট কারন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন। এছাড়াও হাসপাতালে কোন আহত রোগী না আসায় এলাকাবাসীও বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ পোষন করেন।
সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন লাশ দেখতে হাসপাতালে যান। তিনিও এই মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ পোষন করে বলেন, আবু তাহেরের অতীত রেকর্ডের জন্য এই মৃত্যুকে সন্দেহ জনক উল্লেখ করেন। তবে ময়তদন্তের পর তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারন নিশ্চিত হওয়া যবে।
হাসপাতালে আবু তাহের বলেন, ধান কাটার সময়ে নজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল, আলম মিয়া ও শাহিন গং মিলে তাদের উপর হামলা করে এবং তার স্ত্রীকে পিকলের ঘাই দিয়ে হত্যা করেছে।
নজিবুর রহমান চৌধুরীর সন্তান লতিফুর রহমান চৌধুরী সোহেল জানান, আবু তাহের শনিবার সকালে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে আমাদের জমিতে লাশ ফেলে রাখে। তার উদ্দেশ্য হল আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করা।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে আবু তাহের তার শিশু কন্যা রিপা আক্তারকে লুকিয়ে রেখে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপহরন মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ ঢাকা থেকে রিপা আক্তারকে উদ্ধার করে। এর আগে সে গ্রামের অন্যের এক শিশুকে চুরি করে হত্যা করে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। পরবর্তিতে সত্য উৎঘাটন হলে সে ২ বছর জেল খাটে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই মামলার রায় হবে। এতে সে বড় ধরনের শাস্তি পেতে পারে আশংকা থেকে শনিবার নিজ স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে প্রতিপক্ষ দাবী করেছে।
টুক্কা মোল্লার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সম্পর্কে কটুক্তি করে সমালোচিত হয়। গত ১৮ জুন টুক্কা মোল্লার প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে হত্যা করে শনিবার নিহত হওয়া স্ত্রী হোসনা। সে সময় ১৭ দিন পর শিশুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
টুক্কার মোল্লার বিরুদ্ধে খুন, ২৮টি দলিল জালিয়াতি, প্রতারণাসহ বেশ কটি মামলা রয়েছে। ২০০৯ সালের ২ জুন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে ৩ বছরের ঘুমন্ত শিশুকে চুরি করে হত্যা করে টুক্কা মোল্লা। সে তার নিজের শয্যাশায়ী বৃদ্ধ পিতাকে খুন করে ফাঁসিয়ে দেবে বলে এলাকার অনেক মানুষকে ভয় দেখাতো। তার বিরুদ্ধে গ্রামের এক গৃহবধুকে ধর্ষনেরও অভিযোগ রয়েছে। সেই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।
. . . . . . . . .