জগন্নাথপুরে আ’লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা : ১৪৪ ধারা জারি

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ অক্টোবর ২০১৫, ৯:২১ অপরাহ্ণসুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ১৪৪ ধারা জারিসহ অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
দলীয়, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৩ সালে শুধাংশু শেখর রায় বাচ্চুকে আহবায়ক ও জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবাব মিয়াকে সদস্য সচিব করে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট।
এ কমিটির কার্যক্রম থাকা সত্বেও বিগত ২০১৪ সালে ডাঃ আব্দুল আহাদকে সভাপতি ও হাজী ইকবাল হোসেন ভূইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের আরেকটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আকমল হোসেন। এ সময় জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি নিয়ে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন গ্র“প ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান গ্রুপ হিসেবে এলাকায় পরিচিত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে জগন্নাথপুর উত্তর বাজারের আহমদ অটোমিলের সামনে জাতীয় জেলহত্যা দিবস ও পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কর্মীসভার আয়োজন করে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি। একই স্থানে একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে আলোচনাসভার আহবান করে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
এ নিয়ে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরই অংশ হিসেবে প্রথমে নির্ধারিত স্থানে জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির উদ্যোগে আলোচনাসভার পরিবর্তে প্রতিবাদসভা ও আনন্দ মিছিলের পরিবর্তে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ডাঃ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী ইকবাল হোসেন ভূইয়ার পরিচালনায় পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা হাজী আব্দুল জব্বার, মতিউর রহমান, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতা বজলুর রশীদ ভূইয়া, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আফছর উদ্দিন ভূইয়া, পৌর আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শফিকুর রহমান লিলু, উপজেলা যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রিপন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা সাফরোজ ইসলাম মুন্না প্রমূখ। সভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে-জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির পূর্ব ঘোষিত কর্মীসভা পুলিশের হস্তক্ষেপে নির্ধারিত স্থানে করতে পারেননি বলে দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। পরে এখানেই একটি দ্বিতীয় তলা ভবনে সংক্ষিপ্তভাবে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। জগন্নাথপুর বাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি ও পৌর আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য জাহির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য সচিব আবাব মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল আহমদ ভূইয়া, আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম বকুল, মিন্টু রঞ্জন ধর, জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ছালিক আহমদ ডন, যুবলীগ নেতা সেলিম মিয়া প্রমূখ। তবে একই স্থানে একই সময়ে আওয়ামীলীগের দুই গ্র“পের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এলাকায় টানটান উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও ১৪৪ ধারা জারিসহ অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন থাকায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য সচিব আবাব মিয়া জানান, আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করতে অবৈধ কমিটির লোকজন অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক পাল্টা কর্মসূচি দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এখানে তারা সভা করলেও আমাদেরকে করতে দেয়নি পুলিশ। জগন্নাথপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইকবাল হোসেন ভূইয়া জানান, আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে অবৈধ কমিটির কর্মসূচি করায় আমরা প্রতিবাদসভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছি। জগন্নাথপুর থানার (ওসি তদন্ত) খান মোঃ মাঈনুল জাকির জানান, একই সময়ে একই স্থানে দুই পক্ষের কর্মসূচি হওয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ১৪৪ ধারা জারিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। . . . . . . . . .