ধর্মপাশায় রফিক-মোতালেব মুখোমুখি ১৪৪ ধারা, নাছির’র বাসায় কমিটি ঘোষণা

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ অক্টোবর ২০১৫, ১০:০৮ অপরাহ্ণসুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রæপ সম্মেলন ডাকায় উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় রবিবার দুপুরে পূর্বনির্ধারিত সম্মেলন করতে পারেনি কোন পক্ষই। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব খান পক্ষকে সুনামগঞ্জের বাসায় ডেকে এনে ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেছেন জেলা আহŸায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী। এসময় জেলার সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে ডা. রফিক চৌধুরী সমর্থকরা তাৎক্ষণিক উপজেলার গলহা গ্রামে কর্মী সম্মেলন করে ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখান করেন।
এদিকে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনে উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক ফারুক আহমদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনেছেন বঞ্চিতরা। রবিবার বিকালে গঠিত কমিটিগুলো প্রত্যাখ্যান করে এ জেলা আহŸায়কের নিকট লিখিত ব্যাপরে নালিশ করেছেন সাবেক উপজেলা সভাপতি আনছার উদ্দিন সমর্থক নেতারা।
দলীয় সূত্র জানায়, ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির একাংশের আহŸায়ক আব্দুল মোতালেব খান রবিবার দুপুরে উপজেলা সদরে বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দেন। একই সময়ে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রফিক চৌধুরী সমর্থিত অংশের আহŸায়ক ইসতিয়াক চৌধুরী স্বপনও একই স্থানে ও একই সময়ে পাল্টা সম্মেলনের ডাক দেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে প্রশাসন রবিবার সকাল ৬টা থেকে থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করে।
১৪৪ ধারার কারণে উপজেলা সদরে সম্মেলন করতে না পেরে দুপুরে মোতালেব সমর্থকদের জলিলপুরের বাসায় ডেকে এনে ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেন জেলা আহŸায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী। কমিটিতে উপজেলা চেয়াম্যান আব্দুল মোতালেব খানকে সভাপতি, আলী আমজদকে সাধারণ সম্পাদক ও সাইফুল ইসলাম কামালকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই তিন নেতা পরবর্তীতে পুর্ণাঙ্গ কমিটি করবেন বলে জানায় দলীয় সূত্র।
এসময় জেলা বিএনপির প্রথম সদস্য ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সদর উপজেলা চেয়াম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, নাছির চৌধুরী ঘোষিত উপজেলা কমিটি তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেছন রফিক চৌধুরী অংশের নেতারা।
রবিবার দুপুরে উপজেলা গলহা গ্রামে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে ‘একতরফা’ কমিটি গঠনের অভিযোগ আনেন রফিক সমর্থকরা। এসময় তারা জেলা আহŸায়কের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সকল পক্ষকে নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন রফিক চৌধুরী সমর্থক অংশের উপজেলা আহŸায়ক ইশতিয়াক চৌধুরী স্বপন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক নাছির চৌধুরী বলেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছয় ইউনিয়নের ১২ কাউন্সিলরকে বাসায় ডেকে এনে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব ব্যাপারে বড় দলে দ্বিমত থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রফিক চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব খান দীর্ঘদিন ধরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। এর আগে উপজেলার মধ্যনগর থানা কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। সেখানেও ১৪৪ ধারা জারি করে পরিস্থিতি সামাল দেয় প্রশাসন।
এদিকে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনে উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক ফারুক আহমদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার লিখিত নালিশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। গতকাল বিকালে উপজেলা বিএনপি নেতা আউয়াল উদ্দিনের নেতৃত্বে জেলা কমিটির আহŸায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরীর নিকট এ লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। লিখিত অভিযোগে গঠিত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোকে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে সেগুলো প্রত্যাখান করেন এবং প্রকাশ্য সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ সময় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা এবাদুর রহমান, নূর আলী, বিএনপি নেতা তৈমুল হক, মহিম উদ্দিন মহির, সামসুদ্দিন প্রমুখ।
. . . . . . . . .