যোগাযোগ করছেন নাফিসা, দল পাচ্ছেন অলক!

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০১৫, ১০:১০ অপরাহ্ণক্রীড়া প্রতিবেদক::
জাতীয় দলের সাবেক তারকা টি-টুয়েন্টির আদর্শ ব্যাটসম্যান অলক কাপালী বিপিএলের তৃতীয় আসরে কোন দল পাননি। এই খবর ইতিমধ্যে ক্রিকেটাঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অলকের দল না পাওয়ায় সমর্থকদের সাথে সাথে হতবাক হয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও ।
বিপিএলে অলককে দেখতে পাবেন না এইজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আফসোসও জানাচ্ছেন অনেকে তবে সবার জন্য সুখবর হল এবার বিপিএল না খেলার আশা ফুরিয়ে যায়নি অলকের। বরং ভালোভাবেই টিকে আছে তা। দেশি খেলোয়াড় কোটা পূরণ না হওয়ায় দলগুলো নতুন খেলোয়াড় নেয়ার জন্য সাতদিন সময় পাচ্ছে।
প্রথম দফায় দল না পেলেও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার মালিক নাফিসা কামালের পক্ষ থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন অলকের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তারা অলককে দলে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহের কথাও নাকি জানিয়েছেন।
সালাউদ্দিন অলকের পুরনো উস্তাদ। বাংলাদেশ দলের সহকারি কোচ থাকার সময় অলক ছিলেন তাঁর শিষ্য আর বিপিএলের প্রথম আসরে সিলেট রয়্যালসের কোচ ছিলেন সালাউদ্দিন, শুরুতে যে দলের কাপ্তান ছিলেন অলক।
তবে অলক কাপালি কারো নাম উল্লেখ না করেই সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনো আশা ছাড়িনি, দলগুলোর আরও দেশি খেলোয়াড় নেয়ার সুযোগ থাকায় ইতিমধ্যে কারো কারো কাছ থেকে ফোন পেয়েছি, সাতদিন সময় আছে আশা করছি দল পাবো।”
অলক কাপালী জাতীয় দলে ঢুকেছিলেন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে। লেগ স্পিন দিয়েই করে ফেলেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম হ্যাট্রিকটাও। তবে সময়ের সাথে সাথে অলক মানেই হয়ে দাঁড়িয়েছিল আলাদা ব্রান্ড। সিলেটের পাড়ার ক্রিকেটের দাপুটে অলক হয়ে উঠেছিলেন দেশের ক্রিকেটের নান্দনিক আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এর উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন। একটা সময় জাতীয় দলে আশরাফুলের পরে অলকই স্ট্রোকের ফুলঝুরিতে মাতোয়ারা হতেন দর্শক। দল হারলেও অলকদের ছোট ছোট কীর্তিতে আনন্দিত হতেন সমর্থকরা।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম কোন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এশিয়া কাপে সেঞ্চুরি করা অলক এরপর খেলেন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগ (আইসিএল)-এ। সেখানে গিয়ে তাঁর করা সেঞ্চুরিটিই যেকোনো ধরনের টি-টুয়েন্টিতে কোন বাংলাদেশীর প্রথম সেঞ্চুরি। এরপর থেকে তাঁর সাথে লেগে যায় টি -টুয়েন্টি স্পেশালিষ্ট তকমাও। সেই টি-টুয়েন্টি স্পেশালিষ্ট অলক বিপিএল-২০১৫ এর প্লেয়ার বাই চয়েসে কোন দল না পাওয়ার খবর চমক হয়েই আসে সবার কাছে ।
প্রথম দুই আসরে পরিকল্পনা মন্ত্রী ও সাবেক আইসিসি প্রধান আ ফ ম কামালের মেয়ে নাফিসা কামালের মালিকানায় ছিল সিলেটের ফ্রেঞ্চাইজি। এবারের আসরে সেই সিলেট রয়াল্যসই আবির্ভূত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নামে। আর সিলেটের নামের ফ্রেঞ্জাইজি চলে যায় আলিফ গ্রুপের কাছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত খবর খুব ব্যতিক্রম কিছু না হলে নতুন জার্সিতে পুরানো ডেরাতেই যোগ দিতে যাচ্ছেন সিলেটের এই তারকা।
সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক অলক কাপালী বিপিএলের প্রথম আসরে ছিলেন আইকন ক্রিকেটার, শুরুর দিকে করেছিলেন সিলেট রয়্যালসের অধিনায়কত্ব। পরের আসরে বরিশাল বার্নাসের হয়েও বলার মত পারফরম্যান্স ছিল তাঁর। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লীগের নিয়মিত পারফর্মার এই তারকা গত জাতীয় লীগ এবং বিসিএল এ শীর্ষ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সেরা পাঁচে ছিলেন। অলক তাই বিএপিলের তৃতীয় আসরে যেকোনো একটি দলে খেলার প্রত্যাশা করতেই পারেন।
প্রথম দুই আসরে নিলামের ভিত্তিতে খেলোয়াড় বাছাই হলেও ফ্রেঞ্চাইজিগুলোর আর্থিক অনিয়মের কারণে এবার সেটা হয়েছে প্লেয়ার বাই চয়েস পদ্ধতিতে। ব্যাটসম্যানদের ক্যাটাগরিতে বি গ্রেডে থাকা অলকের সাথে অবিক্রীত থেকেছেন তাসামুল হক এবং মার্শাল আইয়ুবও। এবারের জাতীয় লীগে টানা দুই সেঞ্চুরি করে দল পাওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন মার্শাল। আবার একই ক্যাটাগরি থেকে সবাইকে চমকে দিয়েই বরিশাল বুলসে সুযোগ পেয়েছেন বিগত কিছুদিন ঘরোয়া লীগেই অনিয়মিত নাদিফ চৌধুরী।
অলক এখনো দল না পেলেও সিলেটের তারকাদের মধ্যে দল পেয়েছেন – এনামুল হক জুনিয়র (চট্টগ্রাম ভাইকিংস), নাবিল সামাদ (ঢাকা ডাইনামাইটস), আবুল হাসান রাজু (ঢাকা ডায়নামাইটস) এবং আবু জায়েদ রাহি (রংপুর রাইডার্স)। তবে প্রথম দুই আসরের মত এবারও বিপিএলে দল পাননি রাজিন সালেহ। . . . . . . . . .