স্ত্রীর হাতে খুন, ১৫ দিন পর সস্ত্রীক গ্রেপ্তার!

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ অক্টোবর ২০১৫, ১১:৪৮ অপরাহ্ণভাড়া বাসায় স্বামীকে হত্যা করে কক্ষে তালা দিয়ে পালিয়েছে স্ত্রী। কয়েকদিন পর দুর্গন্ধ বের হলে দরজা ভেঙে পুলিশ লাশ উদ্ধার করার পর পোশাক দেখে লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন বাড়িওয়ালা। নিহতের কোনো আত্মীয়-স্বজনের সন্ধান না পাওয়ায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশ দাফন করা হয়। কিন্তু এসব ঘটনার ১৫ দিনের মাথায় পুলিশ ওই ‘মৃত’ ব্যক্তিকে সস্ত্রীক গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে অন্য এক কাহিনী।
রাজধানীর দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এনামুল হক সাগর (৩০) ও তার স্ত্রী জয়া (২৫) মোল্লারটেক অ্যাডভোকেট জহির জামানের বাসাটি দুই মাস আগে ভাড়া নেন। বাসায় থাকাকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। পরে রাব্বি (২৫) নামে এক ব্যক্তি বিচার-সালিশ করে দুজনের মধ্যে সমঝোতা করে দেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমঝোতা করে দেয়ার বিনিময়ে তাদের কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন রাব্বি। দাবিকৃত টাকার জন্য সাগর-জয়াকে প্রায়ই চাপ দিতেন রাব্বি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে রাব্বিকে টাকার জন্য বাসায় যেতে বলেন সাগর। রাত আনুমানিক ১১টায় রাব্বি ওই বাসায় গেলে স্বামী-স্ত্রী পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে (রাব্বিকে) শ্বাসরোধে হত্যা করে মুখমণ্ডল মেডিসিন দিয়ে বিকৃত করে ফেলে এবং সাগর তার নিজের জামা-কাপড় পরিয়ে দরজা বন্ধ করে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান।
এ ঘটনার দুদিন পর অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছাড়ালে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করলে বাসার মালিক মৃতদেহের গায়ের জামা-কাপড় দেখে লাশটি সাগরের বলে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে পাঠায়।
এসআই মুস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘লাশের মুখমণ্ডল বিকৃত থাকায় এবং সাগরের জামা-কাপড় পরিহিত থাকায় প্রথমে বাড়িওয়ালা ও অন্য ভাড়াটিয়ারা মনে করেছিল সাগরের স্ত্রী সাগরকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। সাগরের কোনো ঠিকানা বা আত্মীয়-স্বজনদের পরিচয় না থাকায় লাশ ২২ সেপ্টেম্বর বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে সাগর নামেই দাফন করা হয়। পরে এ ঘটনায় জয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।
কিন্তু গত এক সপ্তাহ আগে জয়া তার স্বামীকে নিয়ে রাজশাহী সদর এলাকায় বসবাস করছে, এমন খবর পায় পুলিশ। পুলিশ পলাতক দুজনকে ধরতে গত সোমবার ওই এলাকায় অভিযানকালে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সাগর-জয়া কৌশলে পুটিয়া এলাকায় চলে যান। পরে মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদেরভিত্তিতে পুটিয়া এলাকা থেকে সাগর ও জয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, দক্ষিণখান থানার ওসি শামিম অর রশিদ তালুকদার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। বুধবার তাদের আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।
. . . . . . . . .