হাজির হয়েও গরহাজির সাকা চৌধুরীর স্ত্রী

সিলেটের কন্ঠ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০১৫, ১০:৫৭ অপরাহ্ণ
সোমবার বহুল আলোচিত এ মামলাটিতে চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য জামিনে থাকা আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে এসে হাজিরাও দাখিল করেন।
বেলা ২টার সময় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সঙ্গত কারণে ঘণ্টা দু-এক পরে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। হঠাৎ করেই শুনানি শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেক আগে অদৃশ্য কারণে জামিনে থাকা আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের চৌধুরীর হাজিরাপত্রটি প্রত্যাহার করা হয়। সেই সঙ্গে অসুস্থতার জন্য ট্রাইব্যুনালে আসতে পারেননি মর্মে একটি সময়ের আবেদন দাখিল করেন।
এরপর শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিকালে ফারহাদ কাদের চৌধুরীর ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার বিষয়টি বেমালুম চেপে রেখে অসুস্থতার জন্য আসামি ট্রাইব্যুনালে আসতে পারেননি বলে সময়ের আবেদন দাখিল করেন এবং তা মঞ্জুরের জন্য প্রার্থনা জানান। এসময় বিচারক পিপির বক্তব্য জানতে চান। সংশ্লিষ্ট পিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শামীম তখন বলেন, বেশ কয়েকবার মামলাটির চার্জ শুনানি পেছানো হয়েছে। তাই আর না পিছিয়ে তিনি চার্জ গঠনের আবেদন জানান।
কিন্তু বিচারক আসামির সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে চার্জ শুনানির জন্য আগামী ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। তখন আইনজীবীরা ও অন্যান্য মামলার বিচার প্রার্থীরা যারা সাকা চৌধুরীর স্ত্রীকে ট্রাইব্যুনালে দেখেছেন তারা আইনজীবীর শুনানি এবং তৎপর বিচারকের আদেশে বিষ্ময়ে একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছিলেন। রংপুর থেকে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘এমন ঘটনাও তাহলে সম্ভব!’
এর আগে আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের চৌধুরী অসুস্থতার অজুহাতে কমপক্ষে পাঁচবার চার্জ গঠনের তারিখ পিছিয়ে দিয়েছিলেন বিচারকরা। তবে ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
এছাড়াও শুনানিকালে জেলহাজতে থাকা আসামি ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, মাহবুবুল আহসান ও নয়ন আলীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ওই মামলায় গত বছর ২৮ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির ইন্সপেক্টর মো. শাহজাহান।
রায় ফাঁসের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী কর্মচারী নয়ন আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে ব্যারিস্টার ফখরুল ও ওই ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী ফারুক আহমেদ জড়িত বলে উল্লেখ করেন। ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত বছর ২০ নভেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় তার চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার হন ব্যারিস্টার ফখরুল। এরপর ২৪ নভেম্বর তার জামিন নামঞ্জুর করে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যদিও পরে ওই রিমান্ড বাতিল করেন হাইকোর্ট।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায় ঘোষণার আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সংবাদকর্মীদের দেখান। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার একেএম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে ওই বছর ২ অক্টোবর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী ও সাঁটলিপিকার ফারুক হোসেন ওই বছর ১০ অক্টোবর নয়ন আলী এবং ১৩ অক্টোবর ফারুক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
. . . . . . . . .